সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৫

দল বাড়ছে বিপিএলে!

স্পোর্টস ডেস্ক : ফিক্সিং কেলেঙ্কারি ও ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের টালবাহানায় মনে হচ্ছিল বিপিএল তৃতীয় আসরে হয়তো তেমন একটা আগ্রহ দেখা যাবে না। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিল। সে কারণেই তৃতীয় আসরে একটি দল কমিয়ে ছয়টি করার পরিকল্পনা করেছিল বিসিবি। এখন দেখা যাচ্ছে ঘটনা পুরো উল্টো। বিসিবির এক্সপ্রেস অব ইন্টারেস্টে (ইওআই) বিপুল সাড়া পড়েছে। দল কেনার জন্য ১১টি নতুন প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছে। পুরনোদের মধ্যে রংপুর রাইডার্সের মালিকপক্ষ বকেয়া পাওনা পরিশোধ করে দিয়েছে। পুরনো আরও কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি বকেয়া শোধ করে দিতে পারে। এত আগ্রহ দেখে এখন দল বাড়ানোর কথা ভাবছে বিসিবি। তাই আট দলের বিপিএল হতে পারে এবার।
দল বাড়ালেও এবার অর্থের ব্যাপারে কোনো ঝুঁকি নিতে রাজি নয় বিসিবি। ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে আগেভাগেই ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক নিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি, ‘এখন আমাদের বিবেচনাধীন আছে ১২টি প্রতিষ্ঠান। ৩০ আগস্ট বা ১ সেপ্টেম্বরের দিকে প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেব। এক কোটি টাকার পে-অর্ডার এবং সাড়ে চার কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি জমা দেওয়ার জন্য। মোট সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা। ব্যাংক গ্যারান্টির টাকা ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক। এই সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা পেলে আমাদের আর কোনো ঝুঁকি থাকে না। বিদেশি এবং স্থানীয় মিলিয়ে সব খরচ হয়ে যাবে। তখন আগের দু’বারের মতো সমস্যা হওয়ার সুযোগ থাকবে না। আমাদের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে যারা এ টাকা দিতে পারবে তাদের নিয়ে আমরা বসব। তখন আমরা বিবেচনা করে দেখব কাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি দেওয়া যায়।’ ফ্র্যাঞ্চাইজিরা কীভাবে দল গঠন করবে সে আলোচনাও গতকাল হয়েছে। বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন, এবার নিলাম নয়, প্লেয়ার্স বাই চয়েস পদ্ধতিতে দলবদল হবে। তিনি বলেন, ‘দেশি ক্রিকেটারদের ক্যাটগরি করে দেওয়া হবে। নজর রাখতে হবে, একটা টিম খুব বেশি শক্তিশালী বা আরেকটা বেশি দুর্বল যাতে না হয়। বিদেশি ক্রিকেটারদেরও বিরাট লিস্ট আমরা দিয়ে দেব। লিস্ট থেকেই নিলে সাত কোটি টাকার মধ্যে ভালো দল করা সম্ভব হবে। এর বাইরেও কেউ বিদেশি আনতে পারে। তবে তাদের পারিশ্রমিকের দায়ভার বিসিবির থাকবে না।’
ইওআই জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ১৭ আগস্ট। পরের দিন বৈঠক করে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা প্রকাশ করে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। সেদিন দেশে ছিলেন না বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তাই দেশে ফিরে গতকাল বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সঙ্গে এক অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বসে অগ্রগতি জেনে নেন বিসিবি সভাপতি। এর পরই দল বাড়ানোর কথা জানান তিনি, ‘দল এবার সাতটির বেশিও হতে পারে। আমরা যদি মনে করি, বেশ কয়েকজন ভালো উদ্যোক্তা আছে, তাহলে আমরা দল বাড়াতেও পারি। এখনই আমাদের বিবেচনায় আছে ১২টি প্রতিষ্ঠান। পুরনো কেউ এলে সংখ্যা আরও বাড়বে।
তখন সেখান থেকে আমাদের বাছাই করতে হবে।’ পুরনো ফ্র্যাঞ্চাইজিদের বকেয়া পরিশোধের শেষ সময় ২৭ আগস্ট। বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন, পুরনোদের জন্য শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন, পুরনো পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের কাছে বিসিবির পাওনা ৩৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সিলেট রয়্যালসের কাছে পাওনা আট কোটি, বরিশাল বার্নার্স সাড়ে ছয় কোটি, রয়্যাল বেঙ্গল খুলনা আট কোটি ১৯ লাখ, দুরন্ত রাজশাহী ছয় কোটি নয় লাখ এবং চিটাগং কিংসের কাছে সাত কোটি ৪৫ লাখ টাকা পাওনা।
এ পাওনা দিলেও পুরনো মালিকদের ফিরিয়ে আনা কতটা যুক্তিযুক্ত হবে! বিসিবি সভাপতি অবশ্য বাস্তবের পথেই হাঁটলেন, ‘নৈতিক হবে কি-না জানি না। তবে আগে যারা বাকি রেখেছিল, এটা তো তাদের বিপক্ষেই যাবে। কিন্তু তারা যদি বকেয়া দিয়ে দেয়, তখন তো ঝুঁকি থাকবে না। এবার যেহেতু আগেই ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিকের ব্যাংক গ্যারান্টি নিচ্ছি। তখন হয়তো আগে কি করেছে এটা গুরুত্ব নাও পেতে পারে।’

কোন মন্তব্য নেই: